নামাজের শিক্ষণীয় ঘটনা (পর্ব-১)

আমি যখন মক্কায় একটি মাসজিদের ইমাম ছিলাম তখন আমার পেছনে একজন যুবক সালাত আদায় করতো। সে দাড়ি শেইভ করে থাকতো, এমনকি ধুমপান করতো। তাকে দেখলে কেউ 'ধার্মিক' মনে করবে না। কিন্তু কখনো এমন হয়নি যে, সালাতের সময় হয়েছে, অথচ সে মাসজিদে নেই।

একদিন যোহরের সালাতের পর ঘুমাতে যাবো, তখনই একটা ফোন এলো,

- আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
- ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
- শায়খ আবদুল্লাহ! আপনি কি আবদুর রহমানকে চিনেন?
- জ্বী, চিনি তো!
- আপনি জরুরি ভিত্তিতে আবদুর রহমানের বাড়ী আসুন।
- আমি তো এখন ঘুমাতে যাচ্ছি।
- এটি খুব জরুরি ব্যাপার!
.
তখন আমি কাপড় পরিধান করে আবদুর রহমানের বাড়ী গেলাম। ভেতরে প্রবেশের পর লোকেরা বললো, 'আবদুর রহমান আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।'
আমি বললাম, 'সুবহানাল্লাহ! সে তো আজ আমাদের সাথে ফজরের সালাত আদায় করেছে!'
তারা বললো, 'জ্বী শায়খ, সে আজ ফজরের সালাত আদায় করেছিলো। অতপর যোহরের সালাত আদায় করছিলো, তখন সাজদারত অবস্থায় ইন্তিকাল করেছে।'
আমি বললাম, 'কোথায় সে?'
তারা আমাকে বললো, 'এই রুমে।'
আমি তার নিকটে গেলাম। গিয়ে দেখি তার চেহারা উজ্জ্বল এবং দাঁত (ও ঠোঁট) হাস্যোজ্জ্বল!' সুবহানাল্লাহ! কী দারুণভাবেই না সে দুনিয়া ত্যাগ করেছে! সাজদা অবস্থায় হাসিমুখে!
.
মাসজিদে নববীর সাবেক ইমাম শায়খ মুহাম্মাদ আল মুহাইসিনির ছেলে শায়খ আবদুল্লাহ আল মুহাইসিনি হাফিযাহুল্লাহর লেকচার থেকে নেয়া। ঘটনাটি তাঁর নিজের জীবনের। তিনি তুর্কিদের সলাতের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে ঘটনাটি শেয়ার করেছেন।
.
আমার মনে হয়, এই ঘটনাটির শিক্ষা সবাই বুঝতে পেরেছেন। আমরা যিনাখোর, সুদখোর, ঘাতক বা যত বড় পাপিষ্ঠই হই না কেনো, সলাত যেনো কখনই ত্যাগ না করি। সালাত হলো আল্লাহ এবং আমাদের মধ্যকার রশি। সালাত ত্যাগ করা মানে সেই রশিকে ছিঁড়ে ফেলা। রাসূল সা. বলেন, ব্যক্তি ও কুফর-শির্কের মাঝে পার্থক্য হলো, সলাত ত্যাগ করা (সহীহ মুসলিম ১/৮৮)। তিনি আরো বলেন, 'যে ব্যক্তি সলাত ত্যাগ করলো, সে কুফুরি করলো।' (সহীহ ইবনু হিব্বান ৪/৩২৩) হাদীসটি সহীহ।
.
সম্মানিত ভাই-বোনেরা! সালাত আমাদের পড়তেই হবে। এটি আমাদের মুসলমানিত্বের আইডেন্টিটি। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন।

নবীনতর পূর্বতন