জা’ফর ইবন আবী তালীব-২য় পর্ব

অন্য দিকে জা’ফর তাঁর  চাচা অব্বাসের নিকট প্রতিপালিত হয়ে যৌবনে পদর্পণ করেন এবং ইসালাম গ্রহণ করে স্বনির্ভর হন।

জ’ফর ইবনে আবী তালীবও তার সহধর্মিনী আসমা বিনতু ‘উমাইস ইসলামী নূরের কাফিলার যাত্রাপথে তাতে যোগদান করেন। তাঁরা দু’জনই হযরত সিদ্দীকে আকবরের হাতে রাসূলুল্লাহর (সাঃ)  ‘দারুল আরকামে ‘প্রবেশের পূর্বেই ইসলাম গ্রহণ করেন। (দারুল আরকাম’ মক্কার একটি গৃহ। দারুল ইসলাম নামে ও প্রসিদ্ধ। গৃহটি আরকাম ইবন আবদে মান্নাফ আল মাখযুমির । মক্কায় রাসূল সা. এ বাড়ীথেকে  ইসলামের দাওয়াত দিতেন।) একদিন আবু তালিব দেখতে পেলেন , রাসূলুল্লাহর (সা) পাশে দাড়িয়ে আলী নামায আদায় করেছেন । এ দৃশ্য আবু তালিবের খুবই ভালো লাগলো। পাশেই দাঁড়োনো জাফরের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন ঃজা,ফর , তুমি ও তোমার চাচাতো ভাই মুহাম্মাদের  (সা) এক পাশে দাড়িয়ে যাও। জা,ফর ,রাসূলুল্লাহর (সা) বাম দিকেদা*ড়িয়ে সেদিন নামায আদায় করেন। এই ঘটনা জা,ফরের মনে দারুণ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে । এর অল্পকিছু দিনের মধ্যেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। তার পূর্বে মাত্র  ৩১/৩২ জন ইসলাম গ্রহন করেছিলেন।

প্রথম যুগের মুসলমানেরা যেসব দৈহিকও মানসিক কষ্ট ভোগ করেছিল তার সবই এ হাশেমী যুবক ও তার যুবতী স্ত্রী ভোগ করেছিলেন। কিন্তু কখনও তাঁরা ধৈর্যহারা হননি। তাঁরা জানতেন , জান্নাতের পথ বন্ধুর ও কন্টকাকীর্ণ । তবে যে বিষয়টিতাঁদের অন্যান্য দ্বীনি ভাইদের মত তাঁদেরকে ওপীড়া দিত এবং ভাবিয়ে তুলতো তা হলো, ইসলামী অনুশাসনগুলি পালনে এক আল্লাহর ইবাদাতে কুরাইশদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি । প্রতিটি ক্ষেত্রেই কুরাইশরা তাঁদের জন্য ওঁৎ পেতে থেকে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ গ ড়ে তুলতো।

এমনি এক মুহূর্তে জা’ফর ইবন আবী তালিব’ তাঁর স্ত্রী এবং আরও কিছু সাহাবা রাসূলুল্লাহর  (সা) নিকট হাবশায় হিজরাতের অনুমতি চাইলেন। অত্যন্ত বেদনা ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তাদের অনুমতি দিলেন। ব্যাপারটি তাঁর কাছে এত কষ্টদায়কছিল এ জন্য যে, এসব সৎ ও পবিত্র-আত্মালোক তাদের প্রিয় জন্মভূমি-শৈশব কৈশোর ও যৌবনের চারণ ভূমি ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে শুদু এ কারণে যে, তাঁরা বলে আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তাছাড়া অন্য কোন অপরাধে তারা অপরাধী নয় ।তাঁরা দেশত্যাগ করেছে  , তাদের উপর যুলুম,উৎপীড়ন চলছে আর তিনি নিতান্ত অসহা ভাবে তা তাকিয়ে দেখছেন।

মুজাহিদের প্রথম দলটি জ’ফর ইবন আবী তালীবের নেতৃত্ব  হাবশায় উপনীত হলেন। সেখানে তাঁরা সৎ

ন্যায়নিষ্ঠ নাজ্জাশীর দরবারে আশ্রয় লাভ করলেন। ইসরাম গ্রহনের পর এই প্রথমবারের মত তাঁরাএকটু  নিরাপত্তার স্বাদ এবং নিঃশঙ্কচিত্তে স্বাধীনভাবে এক আল্লাহর ইবাদতের মাধুর্য অনুভব করলেন।

মুসলমানদের এ দলটি হাবশায় হিজারত এবং সেখানে বাদশার দরবারে আশ্রয় ও নিরাপত্তা লাভের ব্যাপারে কুরাইশরা অবহিত ছিল । তাঁরা তাদেরকে হত্যা অথবা ফিরিয়ে  আনার জন্য ষড়যন্ত্র আরম্ভ করর। এই ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হযরত উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন “আমরা যখন হাবশায় পৌছলাম, সেখানে সৎ প্রতিবেশী এবং আমাদের দ্বীনের ব্যাপারে নিরাপত্তা লাব করলাম । 

নবীনতর পূর্বতন