একজন অবিশ্বাসীর বিশ্বাস| পর্ব ০১

আমি রুমে ঢুকেই দেখি সাজিদ কম্পিউটারের সামনে উবুঁ হয়ে বসে আছে। খটাখট কি যেন টাইপ করছে হয়তো। আমি জগ থেকে পানি ঢালতে লাগলাম। প্রচন্ড রকম তৃষ্ণার্ত। তৃষ্ণায় বুক পেটে যাবার জোগাড়। সাজিদ কম্পিউটার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,-কি রে, কিছু হইলো?

আমি হতাশ গলায় বললাম,-নাহ।

তার মানে তোকে একবছর ড্রপ দিতেই হবে?-সাজিদ জিজ্ঞেস করলো।

আমি বললাম,-কি আর করা। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।

সাজিদ বললো,-তোদের এই এক দোষ,বুঝলি? দেখছিস পুওর এ্যাটেন্ডেণ্সের জন্য এক বছর ড্রপ খাওয়াচ্ছে,তার মধ্যেও বলছিস,আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।ভাই এখানে কোন ভালোটা তুই পাইলি,বলতো?

সাজিদ সম্পর্কে কিছু বলে নেওয়া দরকার।আমি আর সাজিদ রুমমেট। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক্রে বায়োলজিতেপড়ে।প্রথম জীবনে খুব ধার্মিক ছিলো।নামাজ কালাম করতো। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কিভাবে কিভাবে যেন এগনোষ্টিক হয়ে পড়ে। আস্তে আস্তে স্রষ্টার উপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে এখন পুরোপুরি নাস্তিক হয়ে গেছে। ধর্মকে এখন সে আবর্জনা জ্ঞান মনে করে। তার মতে পৃথিবীতে ধর্ম এনেছে মানুষ। আর ইশ্বর ধারনাটাই এই রকম স্বার্থান্বেষী কোন মহলের মস্তিষ্কপ্রসূত।

সাজিদের সাথে এই মুহূর্তে তাকে জড়াবার কোন ইচ্ছা আমার নেই। কিন্তু তাকে একদম ইগনোর করেও যাওয়া যায়না।

আমি বললাম,-আমার সাথে তো এর থেকেও খরাপ কিছু হতে পারতো, ঠিক না?

-আরে খারাপ হবার অনেক কিছু বাকি আছে কি?

--হয়তো।

-যেমন?

এরকমও তো হতে পারতো, ধর, আমি সারাবছর একদমই পড়াশুনা করলাম না। পরীক্ষায় ফেইল মারলাম। এখন ফেইল করলে আমার এক বছর ড্রপ যেতো। হয়তো ফেইলের অপমানটা আমি নিতে পারতাম না। আত্মহত্যা করে বসতাম।

সাজিদ হা হা হা করে হাসা শুরু করলো।বললো,-কি বিদঘুটে বিশ্বাস নিয়ে চলিসরে ভাই।

এই বলে সে আবার হাসা শুরু করলো। বিদ্রুপাত্মক হাসি।

রাতে সাজিদের সাথে আমার আরো একদফা তর্কহোলো।

সে বললো,-আচ্ছা, তোরা যে স্রষ্টায় বিশ্বাস করিস, কিসের ভিত্তিতে?

আমি বললাম,-বিশ্বস দু ধরনের। একটা হলো প্রমানের ভিত্তিতে বিশ্বাস। অনেকটা, শর্তারোপে বিশ্বাস বলা যায়। অন্যটি হলো,প্রমান ছাড়াই বিশ্বাস।

সাজিদ হাসলো। সে বললো,-দ্বিতীয় ক্যাটাগরিকে সোজা বাংলায় অন্ধ বিশ্বাস বলে রে আবুল। বুঝলি,

আমি তার কথায় কান দিলাম না। বলে যেতে লাগলাম-

প্রমানের ভিত্তিতে যে বিশ্বাস, সেটা মূলত বিশ্বাসের মধ্যে পড়েনা। পড়লেও, খুবই ট্যাম্পোরেরি। এই বিশ্বাস এতই দুর্বল, এটা হঠাৎ হঠাৎ পালটায়।

সাজিদ এবার নড়েচড়ে বসলো। সে বললো,-কি রকম?

আমি বললাম ,-এই যেমন ধর, সূর্য আর পৃথিবীকে নিয়ে সানুষের একটি আদিম কৌতূহল আছে। আমরা আদিকাল থেকেই এদের নিয়ে জানতে চেয়েছি, ঠিক না?

হু, ঠিক।

-আমাদের কৌতূহল মেটাতে বিজ্ঞান আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছে, ঠিক?

হ্যাঁ।

-আমরা একট্রা ছিলাম। আমরা নির্ভূলভাবে জানতে চাইতাম যে সূর্য আর পৃথিবীর রহস্যটা আসলে কি। সেই সুবাধে, পৃথিবীর আমি রুমে ঢুকেই দেখি সাজিদ কম্পিউটারের সামনে উবুঁ হয়ে বসে আছে। খটাখট কি যেন টাইপ করছে হয়তো। আমি জগ থেকে পানি ঢালতে লাগলাম। প্রচন্ড রকম তৃষ্ণার্ত। তৃষ্ণায় বুক পেটে যাবার জোগাড়। সাজিদ কম্পিউটার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,-কি রে, কিছু হইলো?

আমি হতাশ গলায় বললাম,-নাহ।

-তার মানে তোকে একবছর ড্রপ দিতেই হবে?-সাজিদ জিজ্ঞেস করলো।

আমি বললাম,-কি আর করা। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।

সাজিদ বললো,-তোদের এই এক দোষ,বুঝলি? দেখছিস পুওর এ্যাটেন্ডেণ্সের জন্য এক বছর ড্রপ খাওয়াচ্ছে,তার মধ্যেও বলছিস,আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।ভাই এখানে কোন ভালোটা তুই পাইলি,বলতো?

সাজিদ সম্পর্কে কিছু বলে নেওয়া দরকার।আমি আর সাজিদ রুমমেট। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক্রে বায়োলজিতেপড়ে।প্রথম জীবনে খুব ধার্মিক ছিলো।নামাজ কালাম করতো। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কিভাবে কিভাবে যেন এগনোষ্টিক হয়ে পড়ে।চলবে.

নবীনতর পূর্বতন