সাজিদ বললো,-‘সেটা ঠিক বলেছিস। কিন্তু বিজ্ঞানের এটায় নিয়ম যে, এটা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হবে। এখানে শেষ বা ফাইনাল বলে কিছু নেই।
একদম তাই। বিজ্ঞানে শেষ/ফাইনাল বলে কিছু নেই। একটা বৈজ্ঞানিক থিওরি ২ সেকেন্ডও টেকে না, আবার আরেকটা ২০০ বছরও টিওক যায়। তাই, প্রমান বা দলিল দিয়ে যা বিশ্বাস করা হয় তাকে আমরা বিশ্বাস বলিনা। এটাকে আমরা বড়জোর চুক্তি বলতে পারি। চুক্তিটা এরকম,-‘তোমায় ততোক্ষণ বিশ্বাস করবো,-‘যতক্ষণ তোমার চেয়ে অথেনটিক কিছু আমাদের সামনে না আসছে।
সাজিদ আবার নড়েচড়ে
বসলো। সে কিছুটা একমত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
আমি বললাম,-‘ধর্ম বা সৃষ্টিকর্তার ধারনা/অস্তিত্ব হচ্ছে ঠিক এর বিপরীত।
দ্যাখ, বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের মধ্যকার এই গূঢ় পার্থক্য আছে বলেই আমাদের ধর্মগ্রন্থের
শুরুতেই বিশ্বাসের কথা বলা আছে। বলা আছে-‘এটা তাদের জন্য
যারা বিশ্বাস করে।(সূরা বাকারা,০২)
যদি বিজ্ঞানে
শেষ বা ফাইনাল কিছু থাকতো, তাহলে হয়তো ধর্মগ্রন্থের শুরুতে বিশ্বাসের বদলে বিজ্ঞানের
কথাই বলা হতো। হয়তো বলা হতো,-‘এটা তাদের জন্যই
বিজ্ঞানমনষ্ক।
কিন্তু যে বিজ্ঞান
সদা পরিবর্তনশীল, যে বিজ্ঞানের নিজের উপর নিজেরি বিশ্বাস নেই,তাকে কিভাবে অণ্যরা বিশ্বাস
করবে?
সাজিদ বললো,-‘কিন্তু যাকে দেখিনা যার পক্ষে কোন প্রমান নেই তাকে কি করে
আমরা বিশ্বাস করতে পারি।
সৃষ্টিকর্তার
পক্ষে অনেক প্রমান আছে কিন্তু সেটা বিজ্ঞান পুরোপুরি দিতে পারেনা। এটা বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা,সৃষ্টিকর্তার
নয়।বিজ্ঞান অনেক কিছুরই উত্তর দিতে পারেনা। লিষ্ট করতে গেলে নেক লম্বা একটা লিষ্ট করা
যাবে।
সাজিদ রাগি রাগি
গলায় বললো,--‘ফাইজলামো করিস আমার সাথে?
আমি হাসতে লাগলাম।
বললাম,-‘আচ্ছা শোন, বলচি। তোর প্রেমিকার নাম মিতু না?
--‘এইখানে প্রেমিকার ব্যাপার আসছে কেনো?
আরে বলনা আগে।
--‘হ্যা,।
-‘কিছু মনে করিস না। কথার কথা বলেছি। ধর আমি মিতুকে ধর্ষণ
করলাম। রক্তাক্ত অবস্থায় মিতু তার বেডে পড়ে আছে। আরে ধর, তুই কোন ভাবে ব্যাপারটা জেনে
গেছিস।
-‘হু’
---‘এখন ।বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা কর দেখি,মিতুকে ধর্ষণ করায় কোন
আমার শাস্তি হওয়া দরকার?
সাজিদ বললো,--‘ক্রিটিক্যাল কোয়েশ্চান। এটাকে বিজ্ঞান দিয়ে কিভাবে ব্যাখ্যা
করবো?
হা হা হা। আগেই
বলেছি। এমন অনেক ব্যাপার আছে,যার উত্তর বিজ্ঞানে নেই।
কিন্তু এর সাথে
স্রষ্টায় বিশ্বাসের সম্পর্ক কি?
সম্পর্ক আছে।
স্রষ্টায় বিশ্বাসটাও এমন একটা বিষয়,যেটা আমরা, মানে মানুষেরা, আমাদের ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য
প্রমানাদি দিয়ে প্রমান করতে পারবো না। স্রষ্টা কোন টেলিষ্কোপে ধরা পড়েন না। উনাকে অণুবীক্ষাণযন্ত্র
দিয়েও খুজে বের করা যায়না।উনাকে জাষ্ট বিশ্বাস করে নিতে হয়।
সাজিদ এবার ১৮০
ডিগ্রি এঙ্গেলে বেঁকে বসলো। সে বললো,-ধুর! কিসব বাল ছাল বুঝলি। যা দেখিনা তাকে বিশ্বাস
করে নেবো?।
আমি বললাম,-হ্যাঁ।
পৃথিবীতে অবিশ্বাসী বলে কেউই নেই। সবাই বিশ্বাসী। সবাইাওসনন কিছু না কিছুতে ঠিক বিশ্বাস
করে । যা তারা আদৌ দেখেনি বা দেখার কোন সুযোগও নেই। কিন্তু এটা নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলে
না। তারা নির্বিঘ্নে তাতে বিশ্বাস করে যায়। তুইও মেই রকম।
সাজিদ বললো,-
‘আমি? পাগল হয়েছিস? আমি না দেখে কোন কিছুতেই
বিশ্বাস করিনা,করবোও না।
--‘তুই করিস। এবং,এটা নিয়ে তোর মধ্যে কোনদিন কোন প্রশ্ন জাগে
নি। এবং আজকে এই আলোচনা না করলে হয়তো জাগতো
না।
সে আমার দিকে
তাকিয়ে রইলো। বললাম,-‘জানতে চাস?’
হু।
‘আচ্ছা, তোর বাবা-মা’র মিলনেই যে তোর
জন্ম হয়েছে, সেটা তুই দেখেছিলি? বা এই মুহূর্তে
কোন এভিডেন্স আছে তোর কাছে? হতে পারে তোর মা
তোর বাবা ছাড়া অন্য কারো সাথে দৈহিক সম্পর্ক করেছে তোর জন্মের আগে। হতে পারে, তুই অই
ব্যক্তিরই জৈব ক্রিয়ার ফল। তুই এটা দেখিস নি। কিন্তু কোনদিনও কি তোর ম ‘কে এটা নিয়ে প্রশ্ন করেছিলি? করিস নি।