সততার পুরষ্কার : পর্ব-১ | সরলপথ.কম

 

বাদশাহ হারুন-উর-রশীদের শাসন কাল। সেই সময় ইবনে খরীফ নামের এক প্রসিদ্ধ কাপড় ব্যবসায়ী বাগদাদে বসবাস করতেন। তিনি ছিলেন খুবই দীনদার পরহেজগার ও আল্লাহ ওয়ালা। একদা তিনি আহমদ বিন হাবীব নামক এক লোককে বিক্রির উদ্দেশ্যে কিছু কাপড় দিয়ে বাজারে পাঠালেন। সাথে সাথে একটি কাপড়ের ত্রুটির কথা বারবার তাকে বুঝিয়ে বললেন যে, তুমি কিন্তু এই কাপড়ের ত্রুটির কথা অবশ্যই ক্রেতাকে জানিয়ে দিবে।  

 

আহমদ বাজারে গিয়ে কাপড় বিক্রি করে সন্ধ্যায় ফিরে এল। সে বিক্রিত কাপড়ের সমুদয় মূল্য ইবনে খরীফের হাতে দিয়ে বলল, আজকের ব্যবসা খুব ভাল হয়েছে। সবগুলো কাপড় একজনেই নিয়ে গেছে । ইবনে খরীফ জিজ্ঞাসা করলেন, কার কাছে বিক্রি করেছ? কাপড়ের ক্রটি সম্পর্কে তাকে অবহিত করেছ তো? জবাবে আহমদ বলল, ক্রেতা একজন অপরিচিত লোক । মনে হয় এ শহরে নতুন এসেছে। সম্ভবতঃ পারস্যের লোক হবে । তবে কাপড়ের ক্রটির কথাতো তাকে বলিনি । একথাটা আমি একেবারে ভুলেই গিয়েছিলাম। লোকটিও তাড়াহুড়া করে চলে গেল ।

 

একথা শুনে ইবনে শরীফের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। দুঃখ আর ব্যাথায় তাঁর হৃদয়-মন ভারাক্রান্ত হয়ে উঠল। মনে হল, তিনি যেন কোন মহা-বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ অনুতাপ আর আফসোস করার পর তিনি আহমদকে শাসিয়ে বললেন, তোমাকে তো সব কিছু বুঝিয়ে দিয়েছিলাম। তারপরেও এমন ভুল করলে কেন? আর দেরী করার সুযোগ নেই । এক্ষুণি চল ঐ ক্রেতার খোঁজে । আমি ও তোমার সাথে আসছি ।

 

অনেক খোঁজাখোঁজির পর জানা গেল লোকটি একটি হজ্ব কাফেলার সাথে মক্কার পথে রয়েছেন । ইবনে শরীফ মনে মনে বললেন, লোকটি যত দূরেই চলে যাক না কেন, তাকে খোঁজে পেতে যত কষ্টই হোক না কেন তবুও তাকে পেতেই হবে এবং কাপড়ের এই ত্রুটির কথা তাকে জানিয়ে দিতে হবে । তিনি আহমদকে বললেন, যাও, একটি দ্রুতগামী ঘোড়া নিয়ে এসো । আর লোকটির চেহারা ছুরত কেমন তাও আমাকে বলো ।

 

ঘোড়ার ব্যবস্থা হল । লোকটির চেহারা ছুরত ও জানা গেল। অতঃপর তিনি ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে বহুদূর গিয়ে ঐ কাফেলাকে পেয়ে গেলেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে ক্রেতাকেও খুঁজে বের করলেন ।

নবীনতর পূর্বতন