আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন। সরল পথ

হাদীসে পাকে কান্নার ফজীলত সম্পর্কে বহু আলােচনা আসিয়াছে। হযরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমাইয়াছেন, এমন কোন ঈমানদার বান্দা নাই যাহার চক্ষু হইতে সামান্য অশ্রু বাহির হইয়া চেহারায় গড়াইয়া পড়িবে, আর আল্লাহ পাক তাহার উপর দোজখের আগুন হারাম করিয়া দিবেন না।

অন্য হাদীসে আছে, আল্লাহর ভয়ে যখন ঈমানদার বান্দার অন্তর কাপিয়া উঠে, তখন বৃক্ষের পাতার মত তাহার গােনাহসমূহ ঝড়িয়া পড়ে।

একদা হযরত ওকবা বিন আমের পেয়ারা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে হাজির হইয়া আরজ করিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! নাজাত পাওয়ার উপায় কি? জবাবে তিনি এরশাদ ফরমাইলেন, নিজের জবানকে সংযত রাখ, ঘর হইতে বাহির হইও না এবং নিজের গােনাহের জন্য ক্রন্দন করো।

একদা হযরত আয়েশা (রাঃ) রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে আরজ করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার উম্মতের মধ্যে কেহ বিনা হিসাবে জান্নাতে যাইবে কি? এরশাদ হইল, যেই ব্যক্তি নিজের গােনাহের কথা স্মরণ করিয়া ক্রন্দন করিবে, সেই ব্যক্তি বিনা হিসাবে জান্নাতে যাইবে।

অন্য হাদীসে আছে- আল্লাহ পাকের নিকট দুইটি বিন্দুর চেয়ে উত্তম অপর কোন বিন্দু নাই। একটি হইল অশ্রু বিন্দু, যাহা আল্লাহর ভয়ে নির্গত হয় এবং অপরটি রক্ত বিন্দু, যাহা আল্লাহর পথে জেহাদ করার সময় দেহ হইতে বাহির হয়।

রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমাইয়াছেন, কেয়ামতের দিন আল্লাহ পাক সাত ব্যক্তিকে ছায়া দান করিবেন, যেই দিন তাহার ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া থাকিবে না। তাহাদের মধ্যে একজন হইবে। সেই ব্যক্তি, যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করিয়া কাঁদে।

হযরত আবু বকর ছিদ্দিক (রাঃ) বলেন, যেই ব্যক্তি কাঁদিতে পারে সে যেন কাঁদে। আর যেই ব্যক্তি কাঁদিতে পারে না, সে যেন কান্নার ভান করে। হযরত মােহাম্মদ বিন মুনকাদির যখন ক্রন্দন করিতেন, তখন চোখের পানি চেহারা ও দাড়িতে মুছিয়া লইতেন। তিনি বলিতেন, আমি জানিতে পারিয়াছি যে, যে জায়গায় চোখের পানি লাগিবে, দোজখের আগুন সেই জায়গা স্পর্শ করিবে না। চলিবে...

 কে/জেড -০১

 

নবীনতর পূর্বতন