যাহোক, হতাশা-নিরাশার এক পর্যায়ে তিনি দয়ার সাগর রাহমাতুল্লিল আলামীন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিত হলেন । বললেন- “হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি ঈমান আনতে চাই ; কিন্তু আমার আশংকা হচ্ছে যে, (এই বদ আকৃতির ফলে) আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করতে দেয়া হবে কি-না ।
একথা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সীমাহীন স্নেহ ও সহমর্মিতার দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালেন । অতঃপর দরদভরা কণ্ঠে বললেন- “হে সাআদ! জান্নাতের দরজা তোমার জন্য উন্মুক্ত । সেখানকার প্রবেশ পথে তোমাকে বাধা দেওয়ার কেউ নেই।”
“তাই না কি! আমি জান্নাতে যেতে পারবো !! জান্নাতের প্রবেশদ্বারে কেউ আমাকে বাধা দিবে না!!! - অপরিসীম বিস্ময় ও আনন্দের সঙ্গে তিনি এ কথাগুলো উচ্চারণ করলেন এবং সাথে সাথে বুলন্দ আওয়াজে কালেমায়ে শাহাদত পাঠ করে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নিলেন ।
এর কিছুদিন পরের ঘটনা । হযরত সাআদ (রাঃ) আবারো একটি অভিযোগ নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে হাজির হলেন । দ্বিতীয়বারের মত তার চোখ-মুখ থেকে নৈরাশ্য ঝড়ে পড়ছিল।
তিনি বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল! ইসলাম তো আমার সাথে জান্নাতের ওয়াদা করেছে সত্য; কিন্তু দুনিয়া যে আমাকে ধিক্কার দিচ্ছে । আমি বিবাহ করতে চাচ্ছি ; কিন্তু আমার বদসুরতের কারণে কেউ আমার সাথে আপন মেয়েকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতে রাজী হচ্ছে না।"
বল কী তুমি! কেউ তোমাকে পছন্দ করছে না! যাও, সাকীফ গোত্রের নওমুসলিম সর্দার আমর ইবনে ওয়াহাবকে আল্লাহর রাসূলের ফায়সালা শুনিয়ে দাও যে, তার মেয়েকে আমাদের সাথে বিবাহ দেয়া হয়েছে।”
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখ থেকে কথাগুলো শ্রবণ করে হযরত সা'আদ (রাঃ) সীমাহীন বিস্মিত হলেন। ভাবলেন, এটা কি করে সম্ভব! যার নিকট একজন সাধারণ লোকও স্বীয় কন্যাকে বিবাহ দিতে রাজী হচ্ছে না সেখানে কি করে এক সম্ভ্রান্ত বংশের সম্মানিত সর্দার তার আদরের দুলালীকে বিবাহ দিবে!