কিন্তু বাস্তবতা ছিল তার চেয়ে একটু বেশী । ঘরে ফিরে ফরিদ উদ্দীন তার স্ত্রীকে তো এজন্য কিছুই বললো-ই না উপরন্তু রাত্রে স্ত্রীর পাশে শুয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো এবং স্ত্রীর একটি হাত ধরে বললো , নাহিদা ! আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি তোমার উপর অনেক জুলুম করেছি । অতঃপর সে নাহিদাকে তাবলীগের পুরো ঘটনা শুনাল । স্ত্রী নাহিদা খুশি হয়ে বললো, আমি আপনাকে ক্ষমা করে দিলাম আপনিও আমাকে ক্ষমা করে দিন । এর পর থেকে তাদের দাম্পত্য জীবন অত্যন্ত আনন্দের সাথে কাটতে লাগলো । এভাবে তাবলীগের মাধ্যমে একটি পরিবারের সকল অশান্তি দূরীভূত হয়ে সেখানে শান্তি, সুখ ও আনন্দ স্থান করে নিল ।
ঘটনা এখানেই শেষ নয় । ফরিদ উদ্দীনের বাসার পাশে এক হিন্দু দম্পতি বসবাস করতো । হিন্দু ছেলেটিও প্রতিদিন মদ পানে বিভোর হয়ে রাত্রে স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতো এবং তার উপর অত্যাচারের স্টীম রোলার চালাত । আজ কিছুদিন যাবৎ নাহিদার ঘরে পূর্বের ন্যায় কোনরূপ শোরগোল শুনতে না পেয়ে হিন্দু মেয়েটি নাহিদাকে জিজ্ঞাসা করলো, কি-গো! তোমাদের ঘরে দেখি আগের মতো কোন গালিগালাজ শুনিনা, ব্যাপার কি? নাহিদা তখন হিন্দু মেয়েটিকে তার স্বামীর পূর্ণ ঘটনা শুনাল ।
ঘটনা শুনে হিন্দু মেয়েটির অন্তরেও তাবলীগের প্রতি এক অগাধ ভালবাসা সৃষ্টি হলো । তার মনে হলো , তাবলীগ এমন এক মানুষ গড়ার কারখানা যেখানে চরিত্রহীন মানুষও চরিত্রবান মানুষে পরিণত হয় ।
এক রাতে হিন্দু মেয়েটির স্বামী মদ পান করে বাসায় এসে পূর্বের ন্যায় গালাগালি ও নির্যাতন করতে শুরু করলে মেয়েটি বিরক্ত হয়ে কোন কিছু চিন্তা না করেই বলে ফেললো, দেখ! তুমি এমন করলে কিন্তু তোমাকে তাবলীগ জামাতে পাঠিয়ে দিব । অর্থাৎ তাবলীগের প্রতি হিন্দু মেয়েটির এত বেশী ভক্তি শ্রদ্ধা ও আস্থা সৃষ্টি হয়েছে যে, তার স্বামী হিন্দু কি মুসলমান সে কথা চিন্তা করার সুযোগ ও তার হয়নি ।
বস্তুতঃ তাবলীগ সর্বকালের সকল মানুষের জন্য এমন এক রহমত যার উপকারিতা ভাষায় বলে শেষ করা যাবে না । এর মাধ্যমে আজকের হাজারো পথ হারা মানুষ পথের সন্ধান পাচ্ছে । হাজারো পরিবারে দ্বীনি পরিবেশ কায়েম হচ্ছে । উপরন্তু এই কাজ উম্মতে মোহাম্মদীর এক পবিত্র দায়িত্বও বটে । আল্লাহ আমাদের সকলকে অতি তাড়াতাড়ি এই কাজে অংশগ্রহণ করার তৌফিক দান করুন। আমীন ।